আপনাদের মধ্যে যারা নতুন ভোটার হয়েছে এবং আপনার কাছে যদি ভোটার ফরম নাম্বার থাকে তাহলে সেই ফরম নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড বের করা যাবে।
বাংলাদেশের নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র হিসেবে আইডি কার্ড ব্যবহার করা। এজন্য বিভিন্ন কাজে আমাদের আইডি কার্ড ব্যবহার করতে হয়।
তাছাড়া, আপনার যদি আইডি কার্ড না থাকে তাহলে বিভিন্ন ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হয়। মনে করুন, আপনি একটি সিম কিনবেন সেখানে আইডি কার্ড লাগবে।
আবার মনে করুন, আপনি নিজের নামে একটি বিকাশ একাউন্ট খুলবেন সেখানেও আইডি কার্ড ব্যবহার করতে হবে।
তাই আপনার কাছে যদি ফরম নাম্বার থাকে তাহলে সহজে অনলাইনের মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
এছাড়াও, টোকেন দিয়ে আইডি কার্ড বের করার নিয়ম এবং ডাউনলোড করার নিয়ম সম্পর্কে এই আর্টিকেলে জানতে পারবেন।
পূর্বে আমরা ফরম নাম্বার দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করতে পারতাম এবং ভোটার আইডি নাম্বার যাচাই করতে পারতাম কিন্তু বর্তমানে সেটা বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন।
তাই আপনারা শুধু ফরম নাম্বার দিয়ে NID কার্ড রেজিষ্ট্রেশন করতে পারবেন এবং ডাউনলোড করতে পারবেন।
তাহলে চলুন নিচে থেকে জেনে আসি কিভাবে ফরম নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড বের করা যায় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
ফরম নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড বের করার নিয়ম ২০২৩
আপনি যদি নতুন ভোটার হয়ে থাকেন এবং আপনার কাছে যদি ভোটার ফরম থাকে তাহলে খুব সহজে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এর ওয়েবসাইটে গিয়ে ভোটার ফরম নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড বের করা যাবে।
তবে, এর জন্য আপনাকে নির্বাচন কমিশন এর ওয়েবসাইটে গিয়ে ভোটার ফরম নাম্বার দিয়ে একাউন্ট খুলে রেজিষ্টার করতে হবে।
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ওয়েবসাইটে গিয়ে ফরম নাম্বার দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড বের করার নিয়ম অনেক সহজ।
প্রথমে ফরম নাম্বার দিয়ে একাউন্ট রেজিষ্টার করে একাউন্ট খুলতে হবে এবং প্রোফাইলে লগইন করে ডানপাশে ডাউনলোড অপশনে ক্লিক করলে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড হয়ে যাবে।
তবে, এই প্রক্রিয়া শুধু তারাই করতে পারবে যাদের বয়স ১৮ বছর সম্পন্ন হয়ে এবং যারা নতুন ভোটার হয়েছেন।
আপনারা যারা নতুন ভোটার নিবন্ধন করেছেন তাদের একটি ভোটার স্লিপ অর্থ্যাৎ ভোটার ফরম দেওয়া হয়েছে। নিচের ভোটার ফরমের ছবি দেওয়া হয়েছে।

উক্ত ভোটার ফর্মের উপরের ডানপাশে ফরম নাম্বার বলে ৮ সংখ্যার একটি নাম্বার লেখা রয়েছে এটাই হলো ফরম নাম্বার। এই ফরম নাম্বার নিয়ে নির্বাচন কমিশন ওয়েবসাইটে একাউন্ট রেজিষ্টার করতে হবে।
নির্বাচন কমিশন ওয়েবসাইটে রেজিষ্টার করার নিয়ম
ধাপ ১ – অ্যাকাউন্ট রেজিষ্টার
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ওয়েবসাইটে যেতে NID service লিখে গুগলে সার্চ করলে প্রথমে যে লিংকটা পেয়ে যাবেন এখানে ক্লিক করলে নিচের ছবির মতো একটি পেজ দেখতে পাবেন। তাছাড়া, এই লিংকে ক্লিক করলে উক্ত পেজে প্রবেশ করতে পারবেন।

ভোটার আইডি কার্ড বের করার জন্য রেজিষ্টার করুন এই অপশনে ক্লিক করুন। এবার নিচের ছবির মতো একটি পেজ দেখতে পাবেন।

এখানে আপনার ৮ সংখ্যার ফর্ম নাম্বার, জন্ম তারিখ এবং ক্যাপচা সঠিক ভাবে লিখে নিচে থাকা সাবমিট অপশনে ক্লিক করুন।
পরের আপনাকে নতুন একটি পেজে নিয়ে যাওয়া হবে। নিচের ছবিতে আপনি যেমন পেজ দেখতে পাচ্ছেন।

এই পেজে আপনার বিভাগ, জেলা, উপজেলা, স্থানী ঠিকানা (বিভাগ, জেলা, উপজেলা) সিলেক্ট করে নিচে থেকে পরবর্তী অপশনে ক্লিক করতে হবে।
পরের পেজে আপনাকে মোবাইল নাম্বার দিয়ে ভেরিফিকেশন করতে হবে। আপনি ভোটার নিবন্ধন হওয়ার সময় যে মোবাইল নাম্বারটি দিয়েছিলেন সেই নাম্বারে ভেরিফিকেশন করতে হবে।
আবার আপনি চাইলে নাম্বার পরিবর্তন করে নতুন নাম্বার ব্যবহার করে ভেরিফিকেশন করতে পারবেন। আপনার মোবাইল নাম্বারে এসএমএস করে ৬ সংখ্যার একটি কোড পাঠানো হবে সেই কোড দিয়ে পরবর্তী অপশনে ক্লিক করতে হবে।
ধাপ ২ – ফেস ভেরিফিকেশন
উপরে কার্যক্রম গুলো সম্পূর্ণ করার পরে আপনার ফেস ভেরিফিকেশন করতে হবে। আপনি যার ভোটার আইডি কার্ড বের করতে চান তার মুখমণ্ডল দিয়ে ভেরিফিকেশন সম্পূর্ণ করতে হবে।
অর্থ্যাৎ আপনি যদি নিজের ফরম নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড বের করা করতে নিজের মুখমণ্ডল বা ফেস ভেরিফাই করে নিবেন।
ফেস ভেরিফিকেশন করার জন্য নির্বাচন কমিশন ওয়েবসাইটের মেন্যু অপশন থেকে ডাউনলোড অ্যাপস অপশনে ক্লিক করে অ্যাপটি ডাউনলোড করুন।

আপনার স্মার্টফোন যদি এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করেন তাহলে এন্ড্রয়েড অ্যাপ ডাউনলোড করবেন। আর যদি অ্যাপেল অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করেন তাহলে আইওএস অ্যাপ ব্যবহার করবেন।
অ্যাপটি ওপের করলে ক্যামেরা চালু হয়ে যাবে এবং ডানে, বামে এবং সোজাসুজি ভাবে আপনার মুখমন্ডল স্ক্যান করতে হবে। আপনার চেহারার সাথে মিল থাকলে ভেরিফিকেশন সম্পূর্ণ হবে।

মুখমণ্ডল বা ফেস স্ক্যান করার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে গেলে আপনাকে অটোমেটিক ভাবে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ওয়েবসাইটের পেজে নিয়ে যাওয়া হবে।
ধাপ ৩ – ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড সেট করুন
মুখমণ্ডল বা ফেস ভেরিফিকেশন করার পরে এবার আপনাকে একাউন্টের ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড সেট করতে বলা হবে। আপনি সম্পূর্ণ ইউনিক ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড সেট করবেন।
এমন ইউজার নেম সেট করবেন যেটা অন্য কেউ আগে ব্যবহার করেনি। এই ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড মনে রাখবেন।
উক্ত ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে আপনি বিশ্বের যেকোনো জায়গা থেকে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম
আপনি যখন প্রথম বার বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ওয়েবসাইটে রেজিষ্টার করবেন তখন অটোমেটিক ভাবে আপনার প্রোফাইল লগইন হয়ে যাবে।
আপনার প্রোফাইলের একটু নিচে এসে দেখবেন ডাউনলোড বাটন দেওয়া রয়েছে। উক্ত ডাউনলোড অপশনে ক্লিক করলে আপনার মোবাইলে অটোমেটিক ভাবে ভোটার আইডি কার্ডের PDF ফাইল ডাউনলোড হয়ে যাবে।
PDF ফাইলটি আপনি বাজারে কম্পিউটারের দোকান থেকে প্রিন্ট করে লেমিনেটিং করে সকল কাজে ব্যবহার করতে পারবেন।
ফরম নাম্বার হারিয়ে গেলে কি করব?
নতুন ভোটার নিবন্ধন হওয়ার সময় সময় আপনাকে যে ফরম দেওয়া হয়েছিলো সেই ফরম যদি হারিয়ে যায় তাহলে নিজের উপজেলা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করুন।
আবার, আপনি নিকটস্থ থানায় জিডি করতে পারেন। জিডির কপি নিয়ে নিজের উপজেলা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করলে তারা আপনার ভোটার আইডি কার্ড বের করে দিবেন।
শেষ কথা
আজকে আমরা জানলাম কিভাবে ফরম নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড বের করা যায় সেই সম্পর্কে। এই আর্টিকেল সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে জানাতে পারেন এবং ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করবেন।