অনলাইনে ব্যবসা করার নিয়ম

অনলাইনে ব্যবসা করার নিয়ম বা অনলাইনে পণ্য বিক্রি করার নিয়ম কানুন অনেকে জানতে চাই। কেননা, অনলাইন বিজনেস করার নিয়ম নিয়ে অনেকের মনে সন্দেহ থাকে।

অনেকের মাথায় অনলাইনে ব্যবসা করার আইডিয়া থাকলেও সঠিক ধারণা থাকে না। যাদের মাথায় online business ideas নেই তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেল।

অনলাইনে ছোট খাটো ব্যবসা আরম্ভ করার ক্ষেত্রে আপনাকে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। যেগুলো অনুসারণ করলে আপনার সফলতা অর্জন করা সহজ হয়ে যাবে।

কারণ, অনেক লোকেরা নিচের প্রক্রিয়া গুলো অনুসারন করেই অনলাইনে ব্যবসায় সফল হয়েছেন।

অনলাইনে ব্যবসা করার নিয়ম

(১) এমন ব্যবসা বাছাই করুন যেটার বাজার চাহিদা রয়েছে

অধিকাংশ লোকেরা পণ্য এবং বাজার নিয়ে রিচার্স করতে ভুল করে। ব্যবসায় সফলতা অর্জন করার সম্ভবনা বৃদ্ধি করার জন্য বাহার যাচাই করা শুরু করে দিন।

অনলাইনে ব্যবসা করার আগে অবশ্যই জেনে নিতে হবে কোন পণ্যের চাহিদা বেশি, সেটাই আপনাকে নির্বচন করতে হবে।

সম্ভবনা যাচাই করার কৌশল অনেকটা এরকম, যে সেটাকে আপনার নিজে খুঁজে নিতে হবে কোন লোকেরা কি খুঁজছেন এবং তাদের চাহিদা কি? যদিও কাজটা বেশ কঠিন কিন্ত ইন্টারনেট এই ধরনের বাজার গবেষণা করা অনেক সহজ করে দিয়েছে।

যেমন,

বিভিন্ন অনলাইন ফোরামে গিয়ে দেখুন লোকেরা কি ধরনের প্রশ্ন করে এবং তারা কি ধরনের সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করছে মানে তাদের চাহিদা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন।

আপনার প্রতিযোগিদের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখুন তারা গ্রহকদের চাহিদা পূরণ করার জন্য কি ধরনের কৌশল অবলম্বন করছে।

ব্যবসার ক্ষেত্রে কিওয়ার্ড রিসার্চ করুন৷ কিওয়ার্ড রিসার্চ করে দেখুন কি ধরনের keywords গুলো লোকেরা বেশি অনুসন্ধান করছে।

আপনি রিসার্চ করে যা পেলেন সেগুলো নোট করুন এবং সেগুলোর মধ্যে থেকে পণ্যের লিস্ট তৈরি করুন।

(২) পণ্য বিক্রিয়ের জন্য কিছু প্রক্রিয়া অনুসারণ করুন

পণ্য বিক্রি করার ক্ষেত্রে কিছু লাভ জনক উপায় রয়েছে যেগুলো অনুসারণ করলে আপনার পণ্য দেখতে আসা গ্রহকদের ক্রেতাতে পরিণত করতে পারবেন। 

যেমন, 

  • পণ্যের একটি আকর্ষনীয় শিরোনাম দিন।
  • পণ্য গ্রহকের যে সকল চাহিদা পূরণ করে তার সম্পর্ন বর্ণনা দিন।
  • লোকেদের কাছে পণ্যের সম্পর্কে বিশ্বাসযোগ্যাতা স্থাপন করেন।
  • আপনার পণ্যের সম্পর্কে কাস্টমারদের কাছ থেকে  ভালো রিভিউ নিয়ে রাখুন।
  • আপনার ব্যবসার প্রোডাক্ট বা পণ্য ব্যবহার করে গ্রহকগণ কিভাবে উপকৃত হবে সে বিষয় বিস্তরিত বর্ণনা দিয়ে দিবেন।
  • পণ্যের সাথে ওয়ারেন্টি / গ্যারান্টি যুক্ত করুন।
  • প্রয়োজনে পণ্যের সাথে বিভিন্ন অফার উল্লেখ করতে হবে।

(৩) একটি ওয়েবসাইট তৈরি করুন

আপনি বাজারজাত এবং পণ্য নির্বচন করার কাজ সম্পর্ন করেছেন কিন্ত এখনো আসল কাজ বাকি। মানে, আপনার কাছে মাত্র ৫ সেকেন্ডের ও কম সময় থাকবে যার মধ্যে গ্রহকদের আকর্ষন করতে হবে।

এই সময়ের মধ্যে আপনি যদি ব্যর্থ হন তাহলে আপনি সম্ভাব্য ক্রেতা হারাবেন। আর এই কারণে আপনার একটি ওয়েবসাইট প্রয়োজন। কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখবেন ওয়েবসাইট এর ক্ষেত্রে।

যেমন,

যতটা সম্ভব ওয়েবসাইট তথ্যবহুল করার চেষ্টা করুন। কিন্ত মনে রাখবেন, পণ্য সংক্রান্ত ব্যতীত অন্য কোনো বিষয় তথ্য প্রদান করবেন না।

ওয়েবসাইটের প্রত্যেকটি পেজ একই রকম রাখার চেষ্টা করবেন। ন্যাভিগেশন যতটা সম্ভব স্পষ্ট, সহজ, সরল রাখবেন যাতে সকলে বুঝতে সহজে বুঝতে পারে।

ক্যাম্পেইন অফার সমূহ ওয়েবসাইটে যুক্ত করে আপনি গ্রহকগণের ইমেইল এড্রেস সংগ্রাহ করতে পারেন।

আপনার ব্যবসার ওয়েবসাইটটি একটি অনলাইন স্টোর-ফ্রন্ট, তাই website কে গ্রাহক বান্ধব করতে হবে।

প্রত্যেকটি পণ্যের হাই-কোয়ালটির ছবি, ভিডিও ওয়েবসাইটে ব্যবহার করুন। যাতে আপনার পণ্যের গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়।

ওয়েবসাইট থেকে পণ্য ক্রয় করার ধাপ গুলো খুব সহজ করতে হবে। যাতে একটা দুইটা ক্লিক করে গ্রহকগণ সহজে পণ্য ক্রয় করতে পারে।

(৪) ওয়েবসাইটে গ্রহক নিয়ে আসার জন্য সার্চ ইঞ্জিন এর সহায়তা নিন

Pay-per click advertising এর মাধ্যমে একটি নতুন ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বা ভিজিটর্স পাবার একটি লাভজনক উপায়। গুগল সার্চ ইঞ্জিন এর তুলনায় অর্গানিক ট্রাফিক পাবার জন্য এটা কার্যকরী।

মনে রাখবেন, PPC ads আপনার ওয়েবসাইটের সার্চ পেজ গুলোকে অনেক দ্রুত উপরে নিয়ে যাবে। এতে করে গ্রহকগণ বা ভিজিটর্সরা আরো বেশি আপনার পণ্য গুলোকে দেখতে পারে।

এতে আপনি শুধু ট্রাফিক পাবেন না বরং আপনার PPC ads এর মাধ্যমে আপনার কি-ওয়ার্ড গুলোকে অর্গানিক ভাবে গুগল রেংকিং (ranking) এ সবার উপরে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে।

(৫) ওয়েবসাইটের রেংক বা খ্যাতি স্থাপন করুন

লোকেরা বর্তমানে বিভিন্ন তথ্য খোঁজার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করে। তাই আপনার ওয়েবসাইটে বিনামূল্যে সেই সব তথ্য সরবাহ করুন।

এতে বিনামূল্যে আপনার ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বা ভিজিটর্স পাবেন এবং সার্চ ইঞ্জিন গুলোতে ওয়েবসাইটকে রেংকিং এ দেখতে পাবেন। 

মূলকথা হল লোকেরা সব সময় সার্চ করে এমন সব তথ্যবহুল আর্টিকেল আপনার ওয়েবসাইটে অন্তর্ভুক্ত করুন। যেন লোকেরা সেগুলো লিখে সার্চ দিলে আপনার ওয়েবসাইট চলে আসে।

ওয়েবসাইটে শুধু আর্টিকেল নয় বরং বিভিন্ন তথ্যবহুল ভিডিও ও আপলোড করতে পারেন। পরবর্তীতে এই আর্টিকেল এবং ভিডিও গুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় মাধ্যমে বন্ধুদের কাছে শেয়ার করতে পারেন।

এতে আপনার ওয়েবসাইটের খ্যাতি বা প্রচার হবে এবং নিয়মিত নতুন নতুন পাঠকদের কাছে পৌঁছে যাবে।

(৬) ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব দিন

মনে রাখবেন, অনলাইনে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে ডিজিটাল মার্কেটিং ছাড়া কখনো সফলতা অর্জন করা সম্ভব নয়। আপনি যদি ব্যবসাকে দ্রুত প্রসার এবং পণ্যের সেল বৃদ্ধি করতে চান তাহলে Digital Marketing এর বিকল্প নেই।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর সেরা মাধ্যম গুলো হল –

  • সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং (social media marketing)
  • ইমেইল মার্কেটিং (email marketing)
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (affiliate marketing)
  • ভিডিও মার্কেটিং (video marketing)
  • কনটেন্ট মার্কেটিং (content marketing)
  • সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন SEO (search engine optimization)

(৭) ইমেইল মার্কেটিং করুন

আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটর্স গুলোকে ক্রেতায় পরিণত করার জন্য ইমেইল মার্কেটিং এর সাহায্য নিতে পারেন। অনলাইনে ব্যবসা এর সব থেকে মূল্যবান হল গ্রহকের ইমেইল এড্রেস।

এই ইমেইল এড্রেস এর মাধ্যমে আপনি গ্রহকদের সাথে কন্টাক্ট (contact) করতে পারবেন এবং নিয়মিত গ্রহকদের ব্যবসায়ের নতুন নতুন পণ্য সম্পর্কে অবগত করতে পারবেন।

আমার শেষ কথা

আশাকরি আপনারা অনলাইনে ব্যবসা করার নিয়ম (how to start a online business) সহজে জানতে পারছেন। আজকের এই আর্টিকেলটি লেখার মূল উদ্দেশ্য ছিলো অনলাইনে ব্যবসা করার সম্পর্কে প্রাথমিক এবং মৌলিক ধারণা দেওয়া।

Leave a Comment

Share via
Copy link
Powered by Social Snap