ই কমার্স ব্যবসা কি? কিভাবে শুরু করবেন এর সুবিধা ও লাভ

বন্ধুরা আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি আপনাদের বলবো ই কমার্স ব্যবসা কি (e commerce bangla)? কিভাবে শুরু করবেন এবং এর লাভ ও সুবিধা গুলো সম্পর্কে। বর্তমানে ইন্টারনেটে জনপ্রিয়তা এবং ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে e-commerce এর অনেক চর্চায় রয়েছে।

তবে, আপনি কি জানেন এই ই-কমার্স এবং ই-কমার্স ব্যবসা কাকে বলে? আমরা যখন ইন্টারনের বা অনলাইন থেকে কোনো প্রডাক্ট কেনা বেচা করে থাকি, তখন আমরা তাকে ই-কমার্স এর মধ্যে পড়ে যায়।

Amazon, Flipkart, ebay, Alibaba ইত্যাদি এই ধরনের অনলাইন শপিং ওয়েবসাইট গুলোকে বলে ই-কমার্স ওয়েবসাইট। কারণ এই ধরনের ওয়েবসাইট গুলো ইন্টারনেট বা অনলাইনের মাধ্যমে প্রডাক্ট কেনা বেচা করার সুযোগ দেয়।

বর্তমানে E-Commerch website গুলো আমাদের সাধারণ জীবনের জন্য অনেক সহজ করে দিয়েছে। এটার মাধ্যমে আপনি ঘরে বসে অনলাইন থেকে পণ্য ক্রয় বিক্রিয় করতে পারবেন। 

ই-কমার্স ওয়েবসাইটের উদাহরণ হলো –

  • Online Shopping
  • Internet Banking
  • Online Hotel booking
  • Electronic Payment
  • Online Auctions
  • Online train
  • Flight booking
  • Online ticketing
  • E-ticketing

তাহালে চলুন এবার নিচে থেকে জেনে আসি ই কমার্স ব্যবসা কি? (e commerce bangla) সেই সম্পর্কে।

ই কমার্স ব্যবসা কি? (What is e commerce bangla)

E-commerce শব্দের পূর্ন অর্থ বা ফুল অর্থ হলো electronic commerce বা internet commerce. ইন্টারনেট ব্যবহার করে যেকোনো পণ্য কেনা বেচা করার প্রক্রিয়াকে বলা হয় ই-কমার্স।

ইন্টারনেট এর মাধ্যমে পণ্য কেনা বেচা করার ক্ষেত্রে buyer বা seller এর মধ্যে data এবং online payment / online translation আদান প্রদান করা হয়ে থাকে।

তবে, বর্তমানে প্রায় অনেক ই-কমার্স ব্যবসার পণ্য গুলো বিক্রিয় করার বিপরীতে কাস্টমারদের অফলাইন (offline) টাকা পেমেন্ট করার ক্ষেত্রে ক্যাশ অন ডেলিভারি (cash on delivery) এর সুবিধা গুলো দিয়ে থাকে।

আসলে ইকমার্স বলতে মূলত যেকোনো physical produce গুলোকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিক্রিয় করানোকে বোঝায়। আবার অনলাইন এর মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের commercial transactions গুলোকেও ই-কমার্স হিসাবে ধরা হয়।

এক কথায় একটি অনলাইন ব্যবসার প্রতিটা দিক গুলোকে ইকমার্স বলা যেতে পারে। আবার যে সকল ব্যবসা গুলোকে অনলাইনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হয় সেই ব্যবসাকেও ই-কমার্স ব্যবসা বলা হয়।

সেই ভাবে যেই ওয়েবসাইট গুলোর মাধ্যমে অনলাইনে বা ইন্টারনেটে পণ্যের কেনা বেচা করা সম্ভব সেগুলো বলা হয় ই-কমার্স সাইট (e-commerce website).

আশাকরি সহজে বুঝতে পারছেন ই কমার্স ব্যবসা কি বা ই-কমার্স ব্যবসা কাকে বলে

কিভাবে ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করবেন – ই-কমার্স ব্যবসা শুরুর গাইডলাইন

আপনি যদি নিজে অনলাইনে ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করতে চান তাহালে সেটা অনেক ভালো কথা। এই বিষযে আমি অন্য একটি আর্টিকেলে বলবো। তবে, আমি নিচে সাধারন কিছু পয়েন্ট বলে দিচ্ছি যে বিষয়ে আপনাদের জানা জরুলি।

  • প্রথমে আপনাকে ভাবতে হবে কোন প্রডাক্ট নিয়ে কাজ করবেন, যেটা আপনার জন্য লাভজনক হবে।
  • প্রডাক্ট এর ডেলিভারি কি কেবল নিজের শহরের মধ্যে করবেন নাকি সম্পর্ন দেশের ভিতর করবেন।
  • যে প্রডাক্ট গুলো আপনি বিক্রিয় করার কথা ভাবছেন সেগুলো কম মূল্যে কোথায় থেকে কিনবেন সেটা ভাবুন।
  • নিজের Godown এর মধ্যে প্রডাক্ট স্টক করুন।
  • নিজের ই-কমার্স ব্যবসাকে রেজিষ্ট্রেশন করুন, প্রয়োজনে trade license ইত্যাদি বের করুন।
  • একটি সুুন্দর আকর্ষনীয় ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করুন।
  • আপনি চাইলে ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে e-commerce website তৈরি করতে পারবেন। তাছাড়া কিছু টাকা দিয়ে একজন ওয়েব ডেভেলপার দিয়ে ওয়েবসাইটটি তৈরি করে দিতে পারবেন।
  • প্রডাক্ট ডেলিভারি করার জন্য আপনার আশে পাশে ভালো কোরিয়া সার্ভিস এর সাথে যোগাযোগ করুন।
  • নিজের ইকমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করার পরে সেটাকে ডিজিটাল মার্কেটিং এর মাধ্যমে অনলাইনে প্রোমোট করুন। এতে মানুষরা আপনার ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে পারবেন।
  • প্রথমে টাকা আয় করার কথা চিন্তা না করে গ্রাহকগণের ডিসকাউন্ট দিয়ে আকর্ষনীয় করতে হবে।
  • একবার যখন আপনার অনলাইন স্টোর থেকে গ্রাহকগণ প্রডাক্ট কিনে ভালো পাবে তখন ধীরে ধীরে আপনার ব্র্যান্ড (brand) তৈরি হতে থাকবে।
  • কিছু জনপ্রিয়তা অর্জন করার পরে আপনি টাকা আয় করার কথা চিন্তা করতে পারেন।

আশাকরি সহজে বুঝতে পারছেন কিভাবে ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করতে হবে। এবং ই-কমার্স ব্যবসা শুরুর গাইডলাইন সম্পর্কে। 

ই-কমার্স এর সুবিধা ও লাভ

  • আপনি নিজের শহর, দেশ বা সম্পর্ন বিশ্ব জুড়ে প্রডাক্ট বা সার্ভিস গুলোকে বিক্রিয় করতে পারবেন এবং কিনতে পারবেন।
  • এই ব্যবসার মাধ্যমে আপনি কোনো মার্কেটে না গিয়ে ঘরে বসে পণ্য কিনতে পারবেন।
  • আলদা আলদা বা বিভিন্ন ধরনের প্রডাক্ট গুলো এক জায়গা থেকে দেখে কিনতে পারবেন।
  • মার্কেটপ্লেস থেকে আরো মূল্য ছাড়ে অনলাইন ই-কমার্স ওয়েবসাইট থেকে কিনতে পারবেন।
  • এমন অনেক ই-কমার্স ওয়েবসাইট রয়েছে যেখান থেকে আপনি প্রডাক্ট কেনার পরে পছন্দ না হলে, প্রডাক্ট ফিরিয়ে দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
  • প্রডাক্ট রিভিউ এর মাধ্যমে প্রডাক্ট কোয়ালাটি এবং অন্যান্য বিষয় গুলো সম্পর্কে জেনে নিতে পারবেন।
  • বিভিন্ন সময়ে আপনি লাভজনক অফার (offer) পাবেন যার ফলে বিভিন্ন জিনিস অনেক কম দামে কিনতে পারবেন।
  • Physical business এর তুলনায় e-commerce business এ মার্কেটিং করা অনেক সহজ এবং লাভজনক।
  • কাস্টমার হিসাবে অনেক দ্রুত latest products গুলো আপনি ই-কমার্স প্লাটফার্ম গুলোতে পেয়ে যাবেন।

আশাকরি সহজে বুঝতে পারছেন e-commerce business এর ফলে আমাদের কেনাকাটা করা কতটা কতটা সহজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার ফলে ই-কমার্স ব্যবহার সাথে জড়িত সকল ব্যবসা গুলো বর্তমানে প্রচুর লাভজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উপভোক্তাকে অল্প ডিসকাউন্ট (discount) এবং ভালো কোয়ালাটির পণ্য দিলে আর কোনো চিন্তা করতে হবে না। এবার হয়তো বুঝতে পারছেন ই-কমার্স এর সুবিধা কি কি

ই-কমার্স এর ইতিহাস

এমনিতে কম্পিউটার ছাড়া ই-কমার্স এর প্রক্রিয়া সম্ভব হতো না। তাছাড়া সেই সময়ে মানুষের ঘরে কম্পিউটার থাকার সম্ভবনা ছিলো খুবই কম। এজন্য E-Commerce এর সম্ভবনা এবং এই ব্যবসা করার পরিকল্পনা কারও মাথায় আসেনি।

তবে, বলা হয় ১৯৯৪ সালের ১১ আগষ্ট বিশ্বের প্রথম ই-কমার্স সেল করা হয়। এক ব্যাক্তি তার ওয়েবসাইটের NetMarket এর মাধ্যমে একটি সিডি (CD) বিক্রয় করেন। জানা গেছে ঔ সময় NetMarket ছিলো একটি online music store.

এর কিছু দিন পর Jeff Bezos এর দ্বারা ১৯৯৪ সালের ৫ শে জুলাই জনপ্রিয় E-Commerce platform শুরু করেন, যাকে আমরা বর্তমানে Amazon নামে চিনি।

ঔ সময় ছিলো online business এর জন্য অনেক ভালো সময়। কারণ, গ্রাহকগণ ঔ সময় ইন্টারনেটের মাধ্যমে পণ্য কেনার এই নতুন অনুভবের মজা গ্রাহন করতে পারছিলো।

Amazon প্রথমে তাদের ব্যবসার কাজ শুরু করেছিলেন বই বিক্রয় দিয়ে। আর প্রথম বছরে তারা ১০ লক্ষের বেশি বই বিক্রিয় করেছিলো। এভাবে amazon তাদের ব্যবসার কাজে অধিক জনপ্রিয়তা পেতে থাকলো।

১৯৯৫ সালের পর থেকে মানুষরা যখন অধিক পরিমানে কম্পিউটার ব্যবহার করা শুরু করলো, তখন থেকে এই ইন্টারনেট ব্যবসা ধীরে ধীরে লাভজনক হয়ে দাঁড়ালো। তখন থেকে প্রডাক্ট বিক্রয় করার বিপরীতে চেক (check) এর মাধ্যমে পেমেন্ট আদায় করা হতো।

এর পরে ১৯৯৮ সালে যখন PayPal অনলাইন পেমেন্ট চলে আসে তখন থেকে অনলাইনে পেমেন্ট করার প্রচুর সুবিধা হয়ে গেল। আর বর্তমানে এই অনলাইন কেনা বেচা করার জনপ্রিয়তা প্রতিটা দেশে রয়েছে।

আপনি প্রত্যেক দেশে অনলাইনে প্রডাক্ট কেনা বেচা করার জন্য নানা ধরণের ই-কমার্স ওয়েবাইট দেখতে পাবেন। আমাদের বাংলাদেশে ও অনেক জনপ্রিয় ইকমার্স ওয়েবসাইট রয়েছে। আশাকরি, ই-কমার্স এর ইতিহাস সম্পর্কে আপনারা বুঝতে পারছেন।

আজকে আমরা কি শিখলাম

তাহালে বন্ধুরা আজকে আমরা শিখলাম ই কমার্স ব্যবসা কি (e commerce bangla) এবং ই-কমার্স ব্যবসা শুরুর গাইডলাইন সম্পর্কে। আপনি যদি অনলাইন বিসনেস শুরু করার কথা ভাবেন তাহালে অবশ্যই করতে পারেন।

আমার লেখা What is e commerce bangla আর্টিকেলটি কেমন লাগলো সেটা অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন এবং ভালো লাগলে শেয়ার করবেন।

2 thoughts on “ই কমার্স ব্যবসা কি? কিভাবে শুরু করবেন এর সুবিধা ও লাভ”

  1. খুব ভালো লিখেছেন। রিসার্চের জন্য সার্চ করতে এসে আপনার আর্টিকেলটি পড়লাম। অনেক উপকার হলো। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

    Reply

Leave a Comment

Share via
Copy link
Powered by Social Snap