সেরা ১০ টি অনলাইন চ্যাটিং অ্যাপস (Chating apps ২০২৩)

চ্যাটিং অ্যাপস (Chating apps) বর্তমানের স্মার্টফোন গুলোতে ইন্টারনেট ব্যবহার করার ফলে আমাদের আমাদের ফোন কলের বিল অনেকটা কমে গেছে।

সাধারন ভাবে আপনি যদি কোনো বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে চান তাহলে ফোনে প্রতিদিন অনেক টাকা খরচ হবে।

আর আপনি যদি স্মার্টফোনের মাধ্যমে এই চ্যাটিং অ্যাপস গুলো ব্যবহার করেন তাহলে যতক্ষণ খুশি ইচ্ছে মতো বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনদের সাথে ভিডিও কল, অডিও কল বা মেসেজ চ্যাটিং করতে পারবেন সম্পূর্ণ ফ্রিতে।

সম্পূর্ণ ফ্রি বলতে আপনার শুধু ইন্টারনেট কানেকশন থাকলে আপনি এই অ্যাপস গুলো ব্যবহার করতে পারবেন।

এই Chating apps গুলোর সাহায্যে দেশ বিদেশের যেকোনো জায়গায় থাকা বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনদের সাথে ভিডিও কল, অডিও কলে কথা বলতে পারবেন।

চ্যাটিং অ্যাপ কি? (What is Chating app)

স্মার্টফোন বা কম্পিউটারে ইন্টারনেট কানেকশন ব্যবহার করে যে অ্যাপের মাধ্যমে সম্পূর্ণ ফ্রিতে ভিডিও কল, অডিও কল এবং টেক্সট চ্যাট করা যায় তাকে চ্যাটিং অ্যাপ বলা হয়।

এই অনলাইন অ্যাপস গুলো ব্যবহার করার ফলে আমাদের ফোনের খরচ অনেকটা কমে গেছে। আপনি ইন্টারনেট কানেকশন দিয়ে যেকেনো দেশের মানুষের সাথে এই অ্যাপের মাধ্যমে সহজে যোগাযোগ করতে পারবেন।

এর মাধ্যমে আপনি বিনামূল্যে ভিডিও কল, অডিও কল, টেক্সট, পিকচার সহ আরো বিভিন্ন ধরনের ডকুমেন্টস গুলো সহজে আদান-প্রদান করতে পারবেন।

কিছু কিছু অ্যাপ গুলো ফোনো ইনস্টল করলে ফোনে সেভ করা নাম্বার গুলোর সাথে অটোমেটিক ভাবে কানেক্ট হয়ে যাবে এবং তাকে নোটিফিকেশনের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।

তাহলে চলুন নিচে থেকে জেনে আসি সেরা ১০ টি অনলাইন চ্যাটিং অ্যাপস সম্পর্কে।

সেরা ১০ টি অনলাইন চ্যাটিং অ্যাপস (Chating apps 2022)

আমি নিচে যে অনলাইন অ্যাপস গুলোর বিষয় আলোচনা সেগুলো আপনারা সহজে সম্পূর্ণ ফ্রিতে google play store থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।

সেরা ৯ টি টাকা ইনকাম করার অ্যাপ (Android apps -2023)

প্রত্যেক স্মার্টফোন ব্যবহারকারী কম বেশি প্রয়োজন অনুযায়ী এই Chating apps গুলো ব্যবহার করে।

তাহলে চলুন নিচে থেকে একে একে অ্যাপস গুলোর বিষয় জেনে আসি –

(১) হোয়াটসঅ্যাপ (Whatsapp)

স্মার্টফোনে খুব সহজে ব্যবহার করা যায় বলে হোয়াটসঅ্যাপ এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই অ্যাপের মাধ্যমে সহজে সাধারণ চ্যাটিং এর পাশাপাশি ছবি, ডকুমেন্টস এবং লোকেশন শেয়ার করতে পারবেন।

এখানে আপনি সর্বচ্ছ ৮ জন মেম্বারের একটি গ্রুপ তৈরি করে গ্রুপে অডিও কল বা ভিডিও কলে সহজে কথা বলতে পারবেন।

হোয়াটসঅ্যাপ আপনার ফোনে সেভ করা যত গুলো কন্টেন্ট নাম্বার থাকে তার মধ্যে সকল হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীর নাম্বার যুক্ত করে নেয়।

এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য ফেসবুকের নিয়ন্ত্রাধীন হওয়া স্বত্বেও এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন এর টপ লেভেলের প্রাইভেসি ও সিকিউরিটি দিচ্ছে।

(২) ফেসবুক মেসেঞ্জার (Facebook Messenger)

বর্তমানে ফেসবুকের ব্যবহার যে ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে করে আপনি হয়তো ফেসবুক মেসেঞ্জার অ্যাপ সম্পর্কে অবশ্যই জানেন।

আপনার যদি একটি ফেসবুক একাউন্ট থাকে তাহলে আপনি মেসেঞ্জার অ্যাপ ব্যবহার করতে পারবেন। মেসেঞ্জার অ্যাপ ব্যবহার করার পাশাপাশি আপনি কম্পিউটারে ওয়েবসাইটে মাধ্যমে ব্যবহার করতে পারবেন।

মেসেঞ্জার এর সুবিধা কথা বলে সারাদিনে শেষ করা যাবে না। এখানে পাবেন ভিডিও কল, অডিও  কল, টেক্সট, ছবি শেয়ারিং করার পাশাপাশি ২৪ ঘন্টা মেয়াদি পোষ্ট স্টোরি সুবিধা।

বর্তমানে মেসেঞ্জারে চালু হয়েছে রুমস। যেখানে ফেসবুক একাউন্ট না থাকলেও লিংক ব্যবহার করে ৫০ জন ব্যাক্তিকে যুক্ত করতে পারবেন।

তাছাড়া, ফ্রিতে ৫০ জন ব্যাক্তিকে নিয়ে অডিও কল বা ভিডিও কল গ্রুপে যুক্ত হতে পারবেন এবং মেসেঞ্জারে সর্বচ্ছ ২৫০ জন ব্যাক্তিকে নিয়ে গ্রুপ চ্যাটিং করতে পারবেন।

(৩) ভাইবার (Viber)

বর্তমানে সেরা কয়েকটি চ্যাটিং অ্যাপের মধ্যে ভাইবারের জনপ্রিয়তা কমে গেলেও এর ফিচারস গুলোর দিক থেকে ভাইবার অন্যান্য অ্যাপস থেকে অনেক এগিয়ে। 

বিশ্বের প্রায় ১ বিলিয়ন এর বেশি মানুষ বর্তমানে ভাইবার ব্যবহার করেন। এতে রয়েছে সেল্ফ-ডিস্ট্রাকটিং, সাধারণ মেসেজিং, গ্রুপ চ্যাটিং, ভিডিও চ্যাটিং সহ আরো বিভিন্ন ধরনের ফিচারস।

ভাইবারের আর একটি বড় ফিচার হলো এর মাধ্যমে আপনি বড় বড় সাইজের ভিডিও ও অডিও ফাইল গুলো সহজে ট্রান্সফার করতে পারবেন।

ভাইবারের পেইড ভার্ষন ও রয়েছে, যার নাম ভাইবার আউট। এর মাধ্যমে বিশ্বের যেকোনো মোবাইলে এবং ল্যান্ডলাইনে কল করতে পারবেন।

এছাড়াও আরো পাবেন বিভিন্ন ধরনের স্টিকার, সারা বিশ্বের খবর জানার মতো অসাধারণ সব সুবিধা গুলো। তাই এখনো অনেকেই চ্যাটিং করার জন্য ভাইবার ব্যবহার করেন।

(৪) উইচ্যাট (WeChat)

১ বিলিয়ন এর অধিক ব্যবহারকারী নিয়ে উইচ্যাট চীন ও ভারতে সব থেকে জনপ্রিয় একটি অনলাইন চ্যাটিং অ্যাপ।

বলা যায় মেসেঞ্জার এবং হোয়াটসঅ্যাপ এর পরে উইচ্যাটের চাহিদা রয়েছে। এর বড় একটি সুবিধা হলো 4G ইন্টারনেট কানেকশন না থাকলেও 2G,3G কানেকশন এর মাধ্যমে হাই-কোয়ালিটির ভিডিও দেখা যায়।

আপনার যদি চীনে বা ভারতে কোনো বন্ধু থাকে তাহলে খুব সহজে wechat এর মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারবেন। 

এখানে আপনি এসএমএস, এমএমএস, ভিডিও কল, অডিও কল সব কিছুই সম্পূর্ণ ফ্রিতে করতে পারবেন। ওছাড়া এখানে এমন কিছু অপশন পাবেন,

যার মাধ্যমে মোবাইল পেমেন্ট, লোকেশন শেয়ার, ব্রডকাস্টিং মেসেজ এর বিকল্প হিসেবে পেয়ে যাবেন। এই অ্যাপের পেমেন্ট ক্ষমতা অনেক। যেকারণে মাস্টার কার্ড, ভিসা কার্ড এর মতো বড় বড় কোম্পানি গুলো প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছে।

(৫) টেলিগ্রাম (Telegram)

Telegram হলো বিজ্ঞাপনমুক্ত একটি চ্যাটিং অ্যাপ্লিকেশন। যেখানে আপনি ইন্টারনেট কানেকশন দিয়ে ব্যবহার করার পরেও কোনো প্রকার বিজ্ঞাপন দেখতে পাবেন না।

টেলিগ্রাম 2G, 3G ইন্টারনেট কানেকশনে কোনো সমস্যা ছাড়াই ভালোই চলে। এর বড় থেকে বড় সুবিধা হলো ২০০,০০০ জন পর্যন্ত মেম্বার নিয় একটি চ্যাটিং গ্রুপ বানাতে পারবেন।

এই অ্যাপের মাধ্যমে ছবি, ভিডিও কল, অডিও কল, টেক্সট মেসেজ করতে পারবেন। এছাড়াও বড় সাইজের অডিও ভিডিও সহ অন্যান্য ডকুমেন্ট গুলো সহজে পাঠাতে পারবেন।

(৬) স্ন্যাপচ্যাট (Snapchat)

স্ন্যাপচ্যাট বর্তমানে সেলিব্রেটিদের কাছে অনেক বেশি জনপ্রিয় একটি অনলাইন চ্যাটিং অ্যাপস। এর ফিচার গুলোর সম্পর্কে বলতে গেলে অন্যান্য অ্যাপের তুলনায় একটু কম।

কিন্তু এর মধ্যে থাকা সকল ফিচার গুলো আপনার হাতের মুঠোই থাকবে। তাই অন্যান্য চ্যাটিং অ্যাপ্লিকেশন এর মধ্যে এর জনপ্রিয়তা কমে যায়নি।

স্ন্যাপচ্যাট ব্যবহার করার জন্য আপনাকে একটি একাউন্ট খুলতে হবে এবং প্রোফাইলে নিজের ছবির পরিবর্তে এভেটার ব্যবহার করতে পারবেন।

এই অ্যাপের সব থেকে বড় সুবিধা হলো দুইজনের মধ্যে হওয়া চ্যাটিং গুলো একবার দেখার পরে ভ্যানিশ হয়ে যায়। যার ফলে তৃতীয় ব্যাক্তি এই চ্যাটিং গুলো দেখতে পায়না।

তাছাড়া আপনি যদি স্ন্যাপচ্যাট এর চ্যাটিং এর স্কিনশর্ট নেন তাহলে অন্য ব্যাক্তির কাছে নোটিফিকেশন চলে যাবে।

স্ন্যাপচ্যাটের আর একটি জনপ্রিয় ফিচার হলো স্টোরিস। স্টোরিস হলো ২৪ ঘন্টা মেয়াদি এাটি পোস্ট। এই পোস্ট আপনার স্ন্যাপচ্যাটের ফলোয়াররা দেখতে পাবেন।

এছাড়া সাধারণ টেক্সট মেসেজ, ভিডিও কল, ভয়েস কল, পিকচার মেসেজ এবং বিভিন্ন ফিল্টার ব্যাবহার করে ছবি তোলার জন্য অ্যাপটি সারা বিশ্বে অনেক জনপ্রিয়।

(৭) স্কাইপ (Skype)

এখান থেকে কয়েক বছর আগে চ্যাটিং অ্যাপ্লিকেশন গুলোর মধ্যে একাই রাজত্ব করেছে স্কাইপ। তবে, তারা সময়ের সাথে নিজেদের আপডেট করতে না পেরে তাদের রাজত্ব হারিয়েছে।

স্কাইপে আপনি সাধারণ টেক্সট চ্যাটিং করার পাশাপাশি ভিডিও কল, অডিও কল, স্টিকার, ফাইল সেন্ড এর সুবিধা গুলো পেয়ে যাবেন।

এর সব থেকে বড় সুবিধা হলো নিদিষ্ট পরিমানে ফি দিয়ে মোবাইল নাম্বারে কল করতে পারবেন।

(৮) ইমু (Imo)

ইমু অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন সর্বপ্রথম চালু হয় ২০০৫ সালে। এর পর থেকে ইমুর সহজ ফিচার গুলোর জন্য এর জনপ্রিয়তা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।

ইমু হলো একটি ফ্রি অডিও কল, ভিডিও কল এবং টেক্সট চ্যাটিং সফটওয়্যার। যার মাধ্যমে 2G, 3G এবং 4G নেটওয়ার্কে সহজে এর সিস্টেম গুলো চালাতে পারবেন।

আপনার ফোনো ইমু অ্যাপটি ইনস্টল করে পরে সেভ করা অন্য ইমু ব্যবহারকারীদের নাম্বার গুলো নোটিফিকেশন এর মাধ্যমে জেনে নিতে পারবেন।

এছাড়া ইমু অন্যান্য চ্যাটিং অ্যাপ্লিকেশন যেমন মেসেঞ্জার, স্ন্যাপচ্যাট এর মতো ২৪ ঘন্টার জন্য পোস্ট স্টোরিস ব্যবহার করতে পারবেন।

(৯) লাইন (Line)

এশিয়া মহাদেশের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় একটি অনলাইন চ্যাটিং অ্যাপ হলো লাইন। যার মাধ্যমে আপনি সহজে কল, মেসেজ পাঠাতে পারবেন।

এই অ্যাপের একটি ফিচার হলো এখানে আপনি পোস্ট করতে পারবেন এবং বন্ধুরা আপনার পোস্টে কমেন্ট করতে পারবেন।

লাইনে গ্রুপ তৈরি করে একটি গ্রুপে ৫০০ জন পর্যন্ত মেম্বার এড করতে পারবেন। আপনি লাইন অ্যাপ থেকে ভিডিও কল অডিও কল করার পাশাপাশি ফ্রিতে ল্যান্ডলাইনে কল করতে পারবেন।

আপনি বন্ধুদের সাথে কলে কথা বলার সময় একই সাথে ইউটিউব ভিডিও দেখতে পারবেন। এছাড়া চ্যাটিং করার জন্য বিভিন্ন স্টিকার পাবেন।

(১০) উইকার মি (Wicker Me)

উইকার মি অ্যাপ্লিকেশনটির নাম আপনি আজ প্রথম শুনলেও এটা আপনার জন্য একটি নিরাপদ চ্যাটিং অ্যাপ্লিকেশন।

এখানে করা আপনার সকল চ্যাটিং গুলো সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং সুরক্ষিত থাকবে। আপনার চ্যাটিং করা তথ্য গুলো অটোমেটিক ভাবে ৬ দিন পরে ডিলেট হয়ে যাবে।

এখানে আপনি ব্যাক্তিগত ভাবে চ্যাটিং করতে পারবেন, আবার ১০ জন গ্রুপ তৈরি করে ও চ্যাটিং করতে পারবেন। এই অ্যাপের একটি পেইড ভার্ষন এবং একটি ফ্রি ভার্ষন রয়েছে।

উইকার মি চ্যাটিং অ্যাপের মাধ্যমে কলিং, ভয়েস মেমো, ভিডিও কলিং, ইমেজ, ফাইল নিরাপদ ভাবে শেয়ার করতে পারবেন।

শেষ কথা

আজকে আমরা জানলাম স্মার্টফোনের জন্য সেরা ১০ টি চ্যাটিং অ্যাপস (Chating apps) সম্পর্কে। এই অ্যাপস গুলো আপনি সম্পূর্ণ ফ্রিতে Google play store থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।

Leave a Comment

Share via
Copy link
Powered by Social Snap