ব্লুটুথ কি? এর ব্যবহার, বৈশিষ্ট্য / সুবিধা এবং অসুবিধা

বন্ধুরা মনে করুন, আপনার মোবাইলে একটি মুভি রয়েছে। এখন আপনার বন্ধুকে সেই মুভিটা আপনার মোবাইল থেকে তার মোবাইলে দিতে চান। তাহালে কিভাবে দিবেন? আপনি অবশ্যই তাকে ব্লুটুথ করে দিবেন। আমরা প্রায় সবাই ব্লুটুথ ব্যবহার করলেও আসলে আমরা জানি না ব্লুটুথ কি?।

তাই আজকেল এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি আপনাদের বলবো ব্লুটুথ কি সেই সম্পর্কে বিস্তরিত। (what is Bluetooth). বর্তমানে মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে প্রায় সকল জিনিসে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।

এমন অনেকে আছেন যারা ব্লুটুথ ব্যবহার করলেও আসলে তারা জাসেন না আসলে ব্লুটুথ কি বা ব্লুটুথ কাকে বলে। তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি আমার লেখা। তাহালে চলুন নিচে থেকে বিস্তরিত জেনে আসি।

ব্লুটুথ কি? (what is Bluetooth)

ব্লুটুথ হলো এমন একটি ওয়ারল্যাস টেকনোলজি যেটার মাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন ইলেক্টনিক ডিভাইস গুলোতে পরস্পর ডাটা / ফাইল ট্রান্সফার করা হয়। অন্য ওয়ারল্যাস কমিউনিকেশন এর তুলনায় Bluetooth অনেক কম দূরত্বর মধ্যে ডাটা ট্রান্সফার করতে পারে।

মনে ইলেক্টনিক ডিভাইস গুলো যদি একটু দুরে থাকে তাহালে Bluetooth এর মাধ্যমে তারা পরস্পর সংযোগ হতে পারে না। যার ফলে ডাটা ট্রান্সফার করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়।

এটা একটা তার বিহীন পার্সোনাল এরিয়া নেটওয়ার্ক প্রটোকল। যেখানে উচ্চমানের নিরাপত্তা বজায় থাকে। আর এই ব্লুটুথ প্রযুক্তির মাধ্যমে যে নেটওয়ার্ক তৈরি হয় তাকে বলা হয় পিকোনেট।

যখন পাশাপাশি দুইটি পিকোনেট একটি সাধারন স্ল্যাভ নোডের মাধ্যমে যুক্ত হয় তখন তাকে বলা স্কাটারনেট। ব্লুটুথ ১০ মিটার দূরত্ব এর পাল্লা কার্যকরী। তবে, বিদ্যুৎ কোষের শক্তি বৃদ্ধি করে এটার পাল্লা বাড়িয়ে ১০০ মিটার পর্যন্ত বাড়িয়ে নেওয়া যায়।

মনে রাখবেন, এটা ২.৫ গিগাহার্জেও কাজ করে। ১৯৯৪ সালে টেলিকম ভেন্ডর এরিকসন ব্লুটুথ উদ্ভাববন করেন। ডেনমার্কের রাজা হ্যারন্ড ব্লুটুথ এর নাম অনুসারে এর নামকরণ করা হয়েছিলো।

ব্লুটুথ এর ব্যবহার

বর্তমানে Bluetooth এর ব্যবহার প্রায় সকল ইলেক্টনিক ডিভাইস গুলোতে করা হয়। তবে, এর মধ্যে উল্লেখ্য যোগ্য বিশেষ কিছুর ব্যবহার আমি আপনাদের সাথে তুলে ধরছি।

  • bluetooth এর মাধ্যমে আপনি আপনার মোবাইল থেকে কম্পিউটার বা ল্যাপটপে ইন্টারনেট সংযোগ করতে পারবেন।
  • পরস্পর দুইটি কম্পিউটার থেকে এই প্রযুক্তির মাধ্যমে ফাইল বা ডাটা সহজে ট্রান্সফার করতে পারবেন।
  • Bluetooth এর মাধ্যমে আপনি multiplayer game গুলো খেলতে পারবেন।
  • ব্লুটুথ হেডফোন দিয়ে মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে বিনা তারে গান শুনতে পারবেন।
  • নানা ধরনের GPS device গুলো রয়েছে যেগুলো এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাজ করে।
  • বর্তমানে Bluetooth এর মাধ্যমে কম্পিউটার থেকে তার ছাড়া কীবোর্ড, মাউস সংযোগ করা যায়।
  • বিভিন্ন আলদা আলদা ডিভাইস গুলোকে পরস্পর ভাবে সংযোগ করে এই Bluetooth. যেমন- keyboard, printers, mouse, gamepad ইত্যাদি।

ব্লুটুথ এর বৈশিষ্ট্য বা সুবিধা গুলো কি কি?

ব্লুটুথ এর অনেক বৈশিষ্ট্য / সুবিধা রয়েছে। সেগুলো আমি নিচে কয়েকটি উল্লেখ করছি। যথা-

  • ২.৪ গিগাহার্টজ ফ্রিক্যুয়েন্সিতে সিগন্যাল আদান প্রদান করে।
  • কাছাকাছি দুইটি ডিভাইসের মধ্যে ডাটা স্থানান্তরে  ব্যবহার করা হয়।
  • ব্লুটুথের ব্যান্ডউইথ ১ এমবিপিএস (MBPS)
  • ১০ মিটার থেকে ১০০ মিটার এর মধ্যে তার ছাড়া ডিভাইসের মধ্যে যোগাযোগ সংযোগ স্থাপন করতে পারবেন।
  • একেকটি পিকোনেট এ মোট ২৫৫ টি স্লেভ নোড থাকে। তবে, ৭টি স্লেভের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে এবং বাকি নোডগুলো নিস্ক্রিয় থাকে।
  • মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, প্রিন্টার, ভিডিও গেম, ডিজিটাল ক্যামেরা ইত্যাদি গুলোকে পরস্পর একসাথে তথ্য বিনিময় করতে ব্লুটুথ ব্যবহার করা হয়।

ব্লুটুথ এর অসুবিধা গুলো কি কি?

প্রতিটা বিষয়ের সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে। ঠিক তেমনি ব্লুটুথ এর কিছু অসুবিধা রয়েছে। সেগুলো আমি নিচে আলোচনা করছি।

  1. ডাটা বা ফাইল ট্রান্সফার রেট অনেক কম।
  2. ১০০ মিটারের বেশি দূরত্বে যোগাযোগ করা যায় না।
  3. মোবাইলে ব্লুটুথ অপশন অন (on) করা থাকলে ব্যাটারির চার্জ খরচ হয়।
  4. ব্লুটুথ দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করলে অনেক স্লো কাজ করে।
  5. Bluetooth এর মাধ্যমে ডাটা ট্রান্সফার করার সিকিউরিটি অনেক কম।

আজকে আমরা কি শিখলাম

তাহালে বন্ধুরা আজকে আমরা শিখলাম ব্লুটুথ কি? বা Bluetooth কাকে বলে? এর ব্যবহার বৈশিষ্ট্য, সুবিধা অসুবিধা গুলো সম্পর্কে বিস্তরিত। আশাকরি What is Bluetooth সেটা আপনারা সহজে বুঝতে পারছেন।

ব্লু টুথ কি এই সম্পর্কে যদি কোনো প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকে তাহালে অবশ্যই নিচে কমেন্টে জানাবেন। আর শেষে ভালো লাগলে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ

Leave a Comment

Share via
Copy link
Powered by Social Snap