WiFi কি? ওয়াইফাই কিভাবে কাজ করে (বিস্তরিত)

বন্ধুরা আজকে আমরা জানবো ওয়াইফাই (WiFi) এর বিষয়ে। WiFi কি বা ওয়াইফাই কাকে বলে এবং কিভাবে কাজ করে ওয়াইফাই সেই সকল বিষয়ে বিস্তরিত ভাবে জানবো।

আগের দিনে মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করাটা অনেক বড় সাংঘাতিক ব্যাপার ছিলো। এর পরে চলে আসলো মোবাইল থেকে কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহার করার প্রচলন।

আর বর্তমানে মোবাইল থেকে অন্য মোবাইলে ইন্টারনেট পাঠানো হয় বা শেয়ার করা হয়। এই ক্ষেএে ওয়াইফাই (WiFi) এর ব্যবহার করা হয় প্রচুর পরিমানে।

তবে, ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য কিন্ত শুধু ওয়াইফাই ব্যবহার করা হয় না। আসলে WiFi হলো এমন একটি wireless single যার মাধ্যমে অনেক গুলো কম্পিউটার ডিভাইসকে একে অপরের সাথে পরস্পর সংযুক্ত করা হয়।

যার ফলে ডিভাইস গুলো থেকে একে অপরের সাথে ফাইল বা ডাটা ইত্যাদি শেয়ার করতে পারে। আর এই wireless single এর ফলে ডিভাইস গুলো ইন্টারনেট ডাটা নিজেদের মধ্যে শেয়ার করে নিতে পারে।

আমরা WiFi কে একটি wireless technology বলতে পারি, কারণ সেখানে কোনো তার ছাড়া একটি কম্পিউটার অপর একটি কম্পিউটার এর সাথে সংযুক্ত হয়।

তাহালে চলুন নিচে থেকে জেনে আসি ওয়াইফাই কি (what is WiFi) বা WiFi কাকে বলে এই বিষয়ে বিস্তরিত ভাবে।

WiFi কি? (What is WiFi)

আপনাদের মধ্যে অনেকে হয়তো জানেন না ওয়াইফাই (WiFi) এর আর একটি নাম রয়েছে। এই প্রযুক্তির পূর্ণ নাম হলো wireless fidelity.

সহজ ভাবে বললে, এটা হলো একটি wireless network technology যার মাধ্যম ব্যবহার করে আজ আমরা সবাই নিজের ঘরে বা অফিসে ইন্টারনেট ব্যবহার করছি।

আমরা আমাদের কম্পিউটার, ল্যাপটপ, স্মার্টফোন এবং অন্য ডিভাইস গুলো এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে পরস্পর সংযোগ করিয়ে তাদের মধ্যে ডাটা বা ইন্টারনেট আদান প্রদান করতে পারি।

এখানে কম্পিউটার ডিভাইস গুলোকে পরস্পর সংযোগ করানোর জন্য কোনো তার এর প্রয়োজন হয় না। মানে সম্পর্ন বেতার এর মাধ্যমে ডিভাইস গুলোকে কানেক্ট করা সম্ভব। আর এটাই হলো ওয়াইফাই কানেকশন এর মূল লাভ ও সুবিধা।

WiFi এর প্রকারভেদ

চলুন তাহালে আমরা নিচে থেকে ওয়াইফাই প্রযুক্তির বিভিন্ন প্রকার বিষয় গুলো সম্পর্কে জেনে আসি।

IEEE 802.11a – ১৯৯৯ সালে IEEE দ্বারা তৈরি করা হয় যেটা ১১৫ ফুট দূরত্ব পর্যন্ত কাজ করতো। এই ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক ৫৪ Mbps কাজ করতো।

IEEE 802.11b – ১৯৯৯ সালে সাধারন ঘরে ব্যবহার করার জন্য এই ওয়াইফাই তৈরি করা হয়। যেটা ১১ Mbps গতিতে ১১৫ দূরত্ব পর্যন্ত কার করে।

IEEE 802.11g – ২০০৩ সালে IEEE 802.11a এবং IEEE 802.11b দুইটা একসাথে করে IEEE 802.11g তৈরি করা হয়। যার গতি ছিলো ৫৪ Mbps এবং এটা ১২৫ ফুট দূরত্ব পর্যন্ত কাজ করে।

IEEE 802.11n – ২০০৯ সালে dual band router গুলোতে কাজ করার জন্য এটাকে তৈরি করা হয়। এতে ডাটা ট্রান্সফার করার ক্ষমতা ছিলো ৫৪ Mbps এবং ২৩০ ফুট দূরত্ব পর্যন্ত কাজ করতো।

IEEE 802.11ac – এটা তৈরি করা হয় ২০০৯ সালে। যার গতি ছিলো ১.৩ Gbps এবং ১১৫ ফুট দূরত্ব পর্যন্ত কাজ করতো।

তাহালে বন্ধুরা আমরা জানলাম WiFi Network এর আলদা আলদা প্রকার এবং বিষয় গুলো সম্পর্কে। আরো জানলাম প্রতিটা আলদা আলদা ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক এর স্পিড ও দূরত্ব কভার করার ক্ষমতা আলদা আলদা হয়।

WiFi কিভাবে কাজ করে?

ডিভাইস গুলোর মধ্যে তথ্য আদান প্রদার করার জন্য ওয়াইফাই প্রক্রিয়াটি ব্যবহার করা হয় তাকে তাকে বলে নেটওয়ার্ক এর রেডিও তরঙ্গ।

আপনি যদি কম্পিউটার, ল্যাপটপ, স্মার্টফোন সহ অন্য ডিভাইস গুলোতে WiFi ব্যবহার করবেন, তখন অবশ্যই ডিভাইস গুলোতে একটি wireless adapter লাগাতে হবে।

তাছাড়া আপনি চাইলে নিজের কম্পিউটারে ও wireless adapter লাগাতে পারবেন। এটার কাজ হলো নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে গ্রহন করা ডাটা বা তথ্য গুলোকে radio single রূপে প্রেরণ করা।

তাই বলে যায় WiFi ওয়্যারলেস ডিভাইস এর মতো কাজ করে। এখানে সংযুক্ত থাকা কম্পিউটার ডিভাইস গুলোর মধ্যে signal পাঠানোর জন্য radio frequencies এর ব্যবহার করা হয়।

আর এই signal গুলোকে এন্টিনার মাধ্যমে ডিকোডার এর মধ্যে পাঠানো হয়। এটাকে আমরা router নামে ও বলে থাকি। signal গুলো রাউটার এর মাধ্যমে ডিকোড হয়ে যাওয়ার পরে সেগুলোকে Ethernet connection এর দ্বারা ইন্টারনেটের কাছে পাঠানো হয়।

এভাবে ইন্টারনেট থেকে ডাটা গুলো আসার পরে সেগুলোকে রাউটার এর মাধ্যমে আসবে। রাউটারের মাধ্যমে ডাটা গুলোকে ডিকোড হয়ে রেডিও সিগন্যালে রূপান্তরিত হবে।

সবশেষে ওয়াইফাই রাউটার গুলোর সাথে সংযুক্ত থাকা কম্পিউটার ডিভাইস গুলো সেই রেডিও সিগন্যাল গুলো গ্রহণ করবে। আশাকরি সহজে বুঝতে পারছেন WiFi কিভাকে কাজ করে।

ওয়াইফাই (WiFi) এর লাভ ও সুবিধা গুলো কি কি?

  • আপনি স্মার্টটিভি গুলোতে ওয়াইফাই এর মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে টিভিতে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন।
  • স্মার্টটিভির জন্য নিজের মোবাইলকে রিমোট হিসাবে ব্যবহার করতে পারবেন।
  • কম্পিউটার থেকে কোনো রকম তার সংযোগ না দিয়ে ওয়াইফাই এর মাধ্যমে ডাটা পাঠাতে পারবেন এবং প্রিন্ট করতে পারবেন।
  • নিজের স্মার্টফোনকে কম্পিউটার এর সাথে WiFi এর মাধ্যমে সংযোগ করতে পারবেন।
  • এন্ড্রয়েড মোবাইল থেকে কম্পিউটার এর মাধ্যমে ডাটা বা ফাইল আদান প্রদার করতে পারবেন।
  • স্মার্টফোন থেকে ইন্টারনেট কম্পিউটারে সংযোগ করে কম্পিউটারে ব্যবহার করতে পারবেন।
  • তার ছাড়া একটি মাএ রাউটার এর মাধ্যমে একাধিক কম্পিউটার ডিভাইস গুলোকে মডেম এর সাথে সংযুক্ত করতে পারবেন।
  • আপনি নিজের স্মার্টফোনে যে মুভি, গেম গুলো খেলেন সেগুলো স্মার্টটিভিতে খেলতে পারবেন।

এগুলো ছাড়াও ওয়াইফাই (WiFi) ব্যবহার করার অনেক গুলো সুবিধা রয়েছে। তবে, যেগুলো সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় সেগুলোর কথা আমি উল্লেখ করেছি।

WiFi চালাতে কি কি লাগে?

WiFi চালাতে বা ওয়াইফাই লাইন নিতে কি কি লাগবে এই প্রশ্নের উক্তর বিভিন্ন রকমের হতে পারে। এক্ষেএে আপনার প্রয়োজন হবে,

  1. Modem
  2. Router
  3. Wireless USB adapter

এই সকল জিনিস গুলো আপনারা বাজারে পেয়ে যাবেন। আপনি modem এবং router দুইটি একই কাজ করে নিতে পারবেন। তাই আপনাকে দুইটা আলদা আলদা কিনতে হবে না। আশাকরি সহজে বুঝতে পারছেন ওয়াইফাই চালাতে কি কি লাগবে।

আজকে আমরা কি শিখলাম

তাহালে বন্ধুরা আজকে আমরা শিখলাম WiFi কি? ওয়াইফাই কিভাবে কাজ করে, এর সুবিধা ও লাভ গুলো কি কি এবং ওয়াইফাই চালাতে কি কি লাগে বিস্তরিত।

আমার লেখা ওয়াইফাই কি আর্টিকেলটি যদি ভালো লাগে তাহালে নিচে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন এবং বন্ধদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

Leave a Comment

Share via
Copy link
Powered by Social Snap