অ্যাসাইনমেন্ট কি? অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নিয়ম

অ্যাসাইনমেন্ট কি? এবং অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নিয়ম জানার জন্য আপনি গুগলে সার্চ করে আমার এই আর্টিকেলটি পড়ছেন।

কি ঠিক বলছি তো? আপনি হয়তো বড় ভাইদের মুখে শুনছেন অ্যাসাইনমেন্টের কথা বা স্কুল, কলেজের শিক্ষকদের মুখে শুনছেন।

এভাবে হয়তো প্রথমে আপনি অ্যাসাইনমেন্টের কথা জানতে পারছেন। প্রথমে আমি নিজেও জানতাম না অ্যাসাইনমেন্ট অর্থ কি।

তাই এই সম্পর্কে জানার জন্য গুগলে সার্চ করেছিলাম assignment meaning in bengali লিখে। এই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে আজকে আমার এই আর্টিকেলটি লেখা।

অ্যাসাইনমেন্ট কি? (assignment meaning in bengali)

আপনাকে একটি উদাহরণের মাধ্যমে অ্যাসাইনমেন্ট সম্পর্কে সহজে বুঝাই বলবো। আপনি ছোট বেলায় যখন কিন্ডারগার্টেন স্কুলে পড়তেন তখন আপনি যা শিখেছেন সেটা লিখতে বলা হতো।

শিক্ষকরা আপনাকে সেই লেখা গুলো বাড়ি থেকে লিখে আনতে বলা হতো। আমরা এই লেখা গুলোকে বলে থাকি হোমওয়ার্ক।

তাহলে অ্যাসাইনমেন্ট এর মানে হলো এক কথায় বাড়ির কাজ বা হোমওয়ার্ক। এই হোমওয়ার্ক গুলো  একই ভাবে উচ্চতর শ্রেণীর স্টুডেন্টদের পুনর্বিবেচনা অনুশীলনের অংশ হিসেবে কাজ দেওয়া হয়।

এই কাজ গুলো আপনার পরিক্ষার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে সাহায্য করে। কলেজে পড়া অনার্স স্টুডেন্টরা অ্যাসাইনমেন্টের অংশ হিসেবে জার্নাল লেখেন।

এক কথায় বলতে গেলে স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রীদের বাড়িতে করার জন্য যে সকল কাজ গুলো দেওয়া হয় তাকে অ্যাসাইনমেন্ট বা হোমওয়ার্ক বলা হয়।

অ্যাসাইনমেন্ট কাকে বলে?

অ্যাসাইনমেন্ট হলো স্টুডেন্টদের তাদের শিক্ষক দ্বারা নির্ধারিত সময়ে সম্পূর্ণ করার জন্য একটি কাজ। স্টুডেন্টদের শেখার উদ্দেশ্য এই কাজ গুলো দেওয়া হয়, যাকে অ্যাসাইনমেন্ট বলে।

অ্যাসাইনমেন্ট বিভিন্ন আকারের হতে পারে। যেমন – লিখিত, ব্যবহারিক বা অনলাইনের মাধ্যমে হতে পারে। শিক্ষকদের উদ্দেশ্য হলো স্টুডেন্টরা যাতে ভালো করে বুঝতে পারে।

Assignment সাধারণ স্টুডেন্টদের বাড়ির কাজের অংশ হিসেবে দেওয়া হয়। এটির মাধ্যমে প্রত্যেক স্টুডেন্টদের শেখার ক্ষমতা বৃদ্ধি বোঝার দুরন্ত একটি উপায়।

অ্যাসাইনমেন্ট এর সুবিধা (Benefit of assignment)

  • লেখার দক্ষতা বৃদ্ধি করে।
  • পরিক্ষার সময় চাপ কমায়।
  • নিদিষ্ট বিষয়ের উপর সহজে জ্ঞান বৃদ্ধি করা যায়।
  • বিশ্লেষণাত্নক ক্ষমতা তৈরি করে।
  • বাস্তব জীবনের উদাহরণ প্রয়োগ শেখার উন্নতি করে।
  • নিজের ভালো পারফরম্যান্স করা যায়।
  • ব্যবসার কাছে বা সাংগঠনিক কাজে আপনি দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।

এসাইনমেন্ট এর উদ্দেশ্য কি?

অ্যাসাইনমেন্ট এর মূল উদ্দেশ্য হলো ছাত্র ছাত্রীদের পড়াশোনা শেখানো। স্টুডেন্টদের প্রশিক্ষণের জন্য বস্তুগতভাবে অবদান রাখতে সাহায্য করে।

স্টুডেন্টদের কোনো বিষয়ের উপর পরিস্কার ধারণা পেতে তাদের অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হয়। অনেক স্টুডেন্ট মনে করে কোনো বিষয় শেখা আমাদের কাজ নয়, এটা শিক্ষকদের দ্বায়িত্ব। 

কিন্ত, এটা সত্যিই ভুল ধারণা। কারণ, শিক্ষকরা কখনো আপনাকে মুখে তুলে শিখাবে না। অ্যাসাইনমেন্টের লেখার প্রধান উদ্দেশ্য হলো স্টুডেন্টদের শেখার দক্ষতা আরো উন্নত করা।

যখন স্টুডেন্টরা তাদের নিজের মস্তিষ্ক ব্যবহার করে তখন তারা সেই বিষয় খুব ভালো ভাবে শিখতে পারে।

এটা বৈজ্ঞানিক ভাবে সত্যি যে একাডেমি অ্যাসাইনমেন্ট গুলো স্টুডেন্টদের মধ্যে সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করে। কারণ, তারা যখন নিজেরা অনুশীলন করে তখন তারা বেশি শিখে।

কথায় বলে, আপনি যত বেশি অনুশীলন করবেন ততই বেশি শিখতে পারবেন, এটাই সত্যি। আশাকরি, বুঝতে পারছেন অ্যাসাইনমেন্ট এর উদ্দেশ্য।

অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নিয়ম

ছাত্র জীবনে স্টুডেন্টদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো অ্যাসাইনমেন্ট। কারণ, আপনি যদি “অ্যাসাইনমেন্ট লেখার পদ্ধতি” না জেনে থাকেন তাহলে পরিক্ষায় ভালো নাম্বার পাওয়া সম্ভব না।

স্কুলের জীবন ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনে ও আপনাকে অ্যাসাইনমেন্ট লিখতে হয়৷ বলতে গেলে অ্যাসাইনমেন্ট হলো পড়ালেখার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।

শিক্ষকগণ স্টুডেন্টদের মেধা ও সৃজনশীলতা যাচাই করার জন্য তাদের হোমওয়ার্ক বা অ্যাসাইনমেন্ট দিয়ে থাকেন।

অ্যাসাইনমেন্ট লেখার জন্য যা যা প্রয়োজন

অ্যাসাইনমেন্ট লেখার সময় আপনাকে খুব সুন্দর ভাবে সেটা লিখতে হবে। এর জন্য আপনার কিছু জিনিসপত্র অবশ্যই দরকার। যেমন –

  • A4 সাইজের অফসেট কাগজ।
  • কালো বলপেন। 
  • কাগজে মার্জিন কাটার জন্য স্কেল ও পেন্সিল।
  • যে বিষয় অ্যাসাইনমেন্ট লিখবেন সেই বিষয়ের বই।
  • নীল রঙের সাইনপেন (লাল এবং কমলা কালারের পেন ব্যবহার করা যাবে না)।
  • অ্যাসাইনমেন্টের তথ্য যে উপায় সংগ্রহ করছেন তার কাগজপত্র ইত্যাদি।

অ্যাসাইনমেন্টে কি কি বিষয় থাকতে হবে?

সাধারণত অ্যাসাইনমেন্ট তিনটি ভাগে লিখতে হয়।যেমন –

  • প্রথম ভাগ = ভুমিকা অংশ 
  • তারপর = মূল অংশ 
  • শেষ ভাগ = উপসংহার অংশ 

ভুমিকা অংশ: প্রথমে ভূমিকা অংশে অ্যাসাইনমেন্টের ব্যাপারে সংক্ষিপ্ত আকারে ধারণা দিতে হবে। যাতে শিক্ষক বা পাঠক ভূমিকা পড়ে সম্পূর্ণ বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা পায়।

মূল অংশ: এখানে মূল বিষয় বস্তুর সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ দিতে হবে। খুব সহজ ভাষায় বর্ণানা করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় সকল তথ্য গুলো উল্লেখ করতে হবে।

উপসংহার অংশ: অ্যাসাইনমেন্টের এই অংশে উল্লেখ্য বিষয়ের ইতি টানতে হবে বা শেষ করতে হবে।

আপনাদের সুবিধার জন্য নিচে সংক্ষিপ্ত আকারে অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নিয়ম হিসেবে একটি নমুনা দেওয়া হয়েছে।

এই নমুনা আপনাকে সংক্ষিপ্ত আকারে বোঝানোর জন্য। তবে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে অ্যাসাইনমেন্ট লেখার পদ্ধতি আরো বড় হয়ে থাকে।

অ্যাসাইনমেন্ট নমুনা

  • বড়দল আফতাব উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজ
  • শিক্ষার্থীর নাম: খালিদ হাসান সুজন 
  • শ্রেণী: ৬ষ্ট শ্রেণী
  • শাখা: ক
  • রোল: ৬
  • বিষয়: বাংলা 
  • বিষয় শিক্ষকের নাম: হাফিজ
  • তারিখ: ০৬-০৫-২০২১
  • বিষয়ের শিরোনাম: বাংলাদেশ অবস্থান

এবার আপনাকে উপরের তিনটি বিষয় মাথায় রেখে বিস্তারিত ভাবে অ্যাসাইনমেন্ট লিখতে হবে। 

অ্যাসাইনমেন্ট কিভাবে লিখতে হয়?

  • অ্যাসাইনমেন্ট লেখার সময় অবশ্যই খাতায় পেন্সিল দিয়ে মার্জিন দিতে হবে। 
  • সব সময় ছোট ছোট বাক্যে অ্যাসাইনমেন্ট লিখতে হবে এবং বড় ও জটিল বাক্য গুলো পরিহার করতে হবে। 
  • খাতায় পরিস্কার এবং স্পষ্ট ভাবে লিখতে হবে।
  • লেখার মধ্যে কাটাকাটি করা যাবে না। 
  • সর্বদা অ্যাসাইনমেন্ট কালো বলপেন দিয়ে লিখতে হবে।
  • লেখা সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করার জন্য নীল বলপেন দিয়ে পয়েন্ট গুলো লিখতে পারবেন। 
  • গণিত ও বিজ্ঞান অ্যাসাইনমেন্ট বাদে অন্য বিষয়ে লেখার সময় প্রয়োজনে চিত্র সংযুক্ত করতে পারবেন।
  • অ্যাসাইনমেন্ট লেখার শেষে একটি খালি কাগজ যুক্ত করতে হবে।

শেষ কথা

আজকে আমরা জানতে পারলাম অ্যাসাইনমেন্ট কি এবং অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নিয়ম সম্পর্কে। আশাকরি assignment কি এই সম্পর্কে সহজে বুঝতে পারছেন।

Leave a Comment

Share via
Copy link
Powered by Social Snap